গুনে গুনে চারটি টমেটো ওজন দিয়ে দেখা যায় ৪০ টাকা এসে যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে একটি নামাতে বলেন শেফালী সাহা। এভাবেই ৩০ টাকার টমেটো, পাঁচ টাকার ধনিয়া পাতা আর ৫ টাকার কাঁচা মরিচ কিনে বাড়ি ফেরেন তিনি।
মঙ্গলবার সকালে মিরপুর শেওড়াপাড়া এলাকায় আনন্দবাজার গলিতে সবজি কিনতে এসেছিলেন শেফালী।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলাপ উঠতেই তিনি বলেন, “কী করব বলেন? যেইটা ধরি সেইটারই দাম বেশি। এখন তো চাইলেও চাহিদা মতো টমেটো কিনতে পারব না। আরও তো কেনাকাটা আছে।”
এদিন মিরপুরের কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, দোকানে দোকানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আর জীবনযাত্রার খরচ নিয়ে আলোচনা করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
তারা জানান, মূল্যবৃদ্ধির আকস্মিক চাপে খরচের খাতায় ভারসাম্য ধরে রাখতে পরিমাণে কম কিনছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
আনন্দবাজারের এক সবজি বিক্রেতা জানান, গত দুই দিনে সব মালের দামই কমবেশি বেড়েছে। এখন মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কচুমুখী ৫০ টাকা, মরিচের কেজি ২৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত চার দিনে পটলের কেজি ১০ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা হয়ে গেছে। ঢেঁড়শও কেজিতে ১০ টাকা করে বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে, ধুন্দল ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা হয়েছে।
টমেটো প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, করলা ৮০, কাকরোল ৬০ টাকা, শসা ৬৯ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে কেবল পেঁপে এখনও সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। প্রতিকেজি ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে কাঁচা পেঁপে।
পীরেরবাগ বাজারে সবজি বিক্রেতা জামশেদ মিয়া বলেন, “এখন সবজির পর্যাপ্ত জোগান আছে। তেলের দাম না বাড়লে এখন হয়তো সবজির দাম আরও কম থাকত। তার পরেও গত চার দিনে দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা।”
জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ানোর পর ভোগ্যপণ্যের বাজারে দৈনন্দিন কেনাকাটার তালিকায় থাকা প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কেজিতে ২ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাল, মাছ-মাংস, শাক-সবজি, ডিমসহ দূরের পথে পরিবহন করতে হয় এরকম সব ধরনের নিত্যপণ্যের দামই বাড়তি।